আমাদেরবাংলাদেশ ডেস্ক: ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের নাল্লামালা জঙ্গলের কাছের ছোট্ট একটি গ্রাম আপ্পাপুর পেনটা। সূর্য ডুবে যাচ্ছে। পঞ্চাশের কিছু বেশি বয়সী দলিত নারী ব্যস্ত একটি ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে। তিনি এক সহকর্মীর ভিডিও ধারণ করছেন যিনি কৃষি এবং বীজ সংরক্ষণ বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
হুমনাপুরের লাক্ষাম্মা ডেকান ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (ডিডিএস) উদ্যোগে স্বেচ্ছায় এই কাজ শুরু করেছেন। তার মতো আরও দুজন নারী ইপ্পালাপল্লির মোল্লাম্মা এবং ঝরাসঙ্গমের মনিগরি একসঙ্গে এই কাজ শুরু করেছেন। তারা আগে কৃষি কাজ করতেন। এখন তারা কৃষকদেরকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ভিডিও নির্মাণ করেন।
লাক্ষাম্মা, মোল্লাম্মা এবং চন্দ্রম্মা মনিগরিকে দিয়ে শুরু হলেও এখন প্রায় ২০ জন নারী কৃষক এই কমিউনিটি মিডিয়া স্টেশনের অধীনে কাজ করছেন। তাদের প্রায় অর্ধেক নারী জমির ফসল বিষয়ক নানা বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করার কাজ করছেন।
লাক্ষাম্মা হাত শুরুতে ক্যামেরায় অদক্ষ থাকলেও এখন একদম পাকা। দক্ষ হাতে ভিডিও ধারণ করেন তিনি। ফসলের মাঠে দাঁড়িয়ে ভিডিও ধারণের ফাঁকে লাক্ষাম্মা বলেন, ‘আমরা এখানে বাজরা, লাল ছোলা এবং মটরশুঁটির বীজ দিতে এসেছি। সেই সঙ্গে কৃষকদেরকে কৃষিকাজের স্বাস্থ্যকর এবং স্বনির্ভর পদ্ধতি শেখাচ্ছি।’
ভিডিও নির্মাণের উদ্দেশ্যে সম্পর্কে লাক্ষাম্মা বলেন, ‘অশিক্ষিত বা স্বল্প শিক্ষিত কৃষকরা ভিডিওগুলি দেখার মাধ্যমে সহজেই শিখতে পারবেন। তাই আমরা মনে করেছি যে বীজ বপন থেকে ফলন সংগ্রহ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি রেকর্ড করতে পারলে তা করা একটি দারুণ শিক্ষার উৎস হবে।’
কমিউনিটি মিডিয়া ট্রাস্টের এই সাংবাদিকরা শুধু যে কৃষি কাজের ভিডিও করেন তা নয়, কৃষকের বিভিন্ন উৎসবের ভিডিও করেন তারা। পথ পান্তলা জাতারা (আদি ফসল উৎসব) এবং ইরুভাকা পানদুগা (বর্ষা বরণ) উৎসবে লাক্ষাম্মা এবং তার সহকর্মীরা ভিডিও ধারণের কাজে ব্যস্ত থাকেন।
লাক্ষাম্মা আগে বেশিরভাগ দলিত নারীদের মতো দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিক ছিলেন। এরপর ডিডিএস এর সঙ্গে কাজ শুরু হয় তার। জীবন বদলে যেতে শুরু করে। ডিডিএস এর বিভিন্ন প্রজেক্টের কাজে তিনি বিশ্বের ১৫টির বেশি দেশে গিয়েছেন। সম্প্রতি মালদ্বীপ ঘুরে এসেছেন তিনি। -দ্য নিউজ মিনিট